বনবিবি আর দক্ষিন রায়ের সুন্দরবন !! রবি ডাকুয়া ।।

 

বনবিবি আর দক্ষিন রায়ের সুন্দরবন !!

রবি ডাকুয়া ।। 

পাতা গুলো গোল নয় মোটেও , তবুও এর নাম গোল পাতা,এরি মাঝে লুকানো বিপদ #

কথায় বলে জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘ। এই দু’য়ে ধরলে যাবে প্রাণ।
বাংলাদেশের সুন্দরবন হতে পারে এই প্রবাদটির সবচেয়ে সুন্দর উপমা ।

এখানে রাত নামে একরাশ ভয় নিয়ে । এখানে অন্ধকারের ভেতর জ্বল জ্বল করে উঠতে পারে বাঘের চোখ ।

আর সেই ভয় থেকেই বিভিন্ন সময়ে, স্থান বিশেষে মানব মনে জায়গা করে নেন নানান দেব-দেবী। হয়ে ওঠেন আরাধ্যা।
মানুষ সেই দেব আর দেবীর পুজো করে । আর এখানে মানুষ মানেই হিন্দু, মুসলিম আর কদাচিত ক্রিস্টান ।
আর সকলেই দেব দেবীদের পুজো করেন ।
পুজো ছাড়া সুন্দরবনে প্রবেশ ? কেউ ভাবতেই পারেন না।
দক্ষিণরায় তিনি বাঘদের দেবতা । বাঘেরা দক্ষিন রায়ের এলাকা পাহারা করে। এলাকা তে অনধিকার বা অযাচিত প্রবেশ করলেই আক্রমন করে তারা । দক্ষিন রায়ের এমনি নৃশংস আদেশ । সেই দক্ষিন রায়ের বাঘদের হাত থেকে বিপদাপন্ন মানুষকে রক্ষা করেন বনের দেবতা বনবিবি-তিনি তো বনের দেবতা- মানুষ পুজো করে তাঁকে ।
‘হেরিটেজ’ এই সুন্দরবনের মাওয়ালি, কাঠুরে আর মৎস্যজীবীদের রক্ষা করেন তিনি।
বনের এই দেবীর বীরত্ব কাহিনীকে নিয়ে লেখা ‘দুখেযাত্রা’ পরিবেশিত হয় গ্রামে। লোক মুখে এই দেবতাদের নিয়ে অনেক কথা-কাহিনি প্রচলিত আছে।


দক্ষিন রায় #
বনবিবি ও দক্ষিণরায়। তাঁরা আবার একের অপরের প্রতিন্দ্বন্দ্বী।
তবে তাঁদের মাঝে রয়েছে সীমান্ত চুক্তি ! কেউ কারো এলাকাতে যাবেন না। আর চুক্তি ভঙ্গ করলেই বিপদ !


বন বিবি #
সুন্দরবনের মানুষদের রক্ষার ভার বনবিবির- এমন বিশ্বাস সকলের মনেই ।
আর দক্ষিন রায় ? দক্ষিন রায়ের সেনা রয়েল বেঙ্গল টাইগার । বাঘ !
দক্ষিণরায়ের জমিতে প্রবেশ নিষেধ । এলাকা পাহারা করেন দক্ষিন রায়ের অনুচর বাঘ- রয়েল বেঙ্গল টাইগার ।
বনবিবি আর দক্ষিন রায় এর যুদ্ধ জনম জনমের ।
শিহরণ জাগানো নানান রোমাঞ্চকর কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে তাঁদের ঘিরেও।



আর-- 

সুন্দরবনে যাতায়াত করবেন ? সকল স্থানেই দেখতে পাবেন এই সকল মন্দির বা দেব দেবীর থান । নদী তীর বা ঘন জঙ্গল — হোক না সে রকম । আপনার চোখে বাধবেই ।
হিন্দু-মুসলিম সকল সম্প্রদায়কেই নিরাপদে রাখেন তিনি।
বনবিবির কোলে থাকে দুখে নামের একটি শিশু।
উল্লেখ যোগ্য যে
হিন্দুদের বনবিবি আর মুসলিমদের বনবিবির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মূর্তি সমুহ আলাদা ধাঁচের ।
মুসলিমদের বনবিবির মাথায় লতা-পাতা আঁকা থাকে। এছাড়াও মাথায় টুপি, মাথায় বিনুনি, টিকলি ও গলায় নানা রকমের হার। পরনে পাজামা ও ঘাগরা আর পায়ে থাকে জুতো-মোজা।
আর শরীরের হলুদ রঙ, মাথায় মুকুট নিয়ে যে দেবী দাড়িয়ে আছেন সুন্দরবনে সেই দেবী, তিনি সনাতন ধর্মীয়দের ।
এখানে মানুষ কে আলাদা করতে পারে না জাত,পাত আর ধর্ম ।
মানুষ পেটের আর প্রানের তাগিদেই দুই হাত তুলে আশীর্বাদ চায় তাঁর কাছে ।

বিচিত্র এই কল্প কাহিনী আর তার থেকেও বিচিত্র এই বিশ্বাস ।
আর হা আরাধনা,পুজো,সালাম,দোয়া,সিন্নি বা মানত ছাড়া কেউ যে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন না সেটি এখনো সত্য ।



ম .ম রবি ডাকুয়া ।।

ছবি সংগ্রহ ।।
## হ্যালো জনতা ডট কম ।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।