প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ২১ - হারিয়ে গেল পালকি!! # আকরাম উদ্দিন আহমেদ ।।

 ## A hellojanata.com Presentation.##


প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ২১ - 

হারিয়ে গেল পালকি!!
# আকরাম উদ্দিন আহমেদ ।

 



হারিয়ে গেল পালকি!!

বাঙালির ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি। বইয়ের পাতায় পালকির কথা আজও উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এর দেখা মেলে না। সভ্যতার ক্রমবিকাশ, যান্ত্রিক যুগ, বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় হারিয়ে গেছে বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক পালকির প্রচলন।

পালকির বর্ণনা দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না। সিনেমা টেলিভিশন পত্রিকায় আমরা হর হামেশাই পালকি দেখে থাকি। সাধারণ পালকি আয়তাকার। চারদিক কাঠ দিয়ে আবৃত এবং ছাদ ঢালু। এর দুদিকে দুটি দরজা থাকে। কোনো কোনোটিতে জানালাও থাকে। বটগাছের বড় ঝুরি দিয়ে তৈরি হয় বাঁট বা বহন করার দন্ড। এতে ১ বা ২ জন যাত্রী নিয়ে ২, ৪ বা ৮ জন বাহক কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যায়। এটির বাহকদের বেহারা বলে। বেহারারা পালকি বহন করার সময় নির্দিষ্ট ছন্দে পা ফেলে চলে। বিশেষ ছন্দে গানও গায়। তাদের চলার গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গানের তাল-লয় পরিবর্তিত হয়।


বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা ভ্রমণের সময় পালকি ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে এবং পরবর্তী সময়ে সেনাধ্যক্ষদের যাতায়াতের অন্যতম বাহন ছিল পালকি। বাংলায় সতেরো ও আঠারো শতকে ইউরোপীয় বণিকরা হাটে-বাজারে যাতায়াত এবং মালপত্র বহনের জন্য পালকি ব্যবহার করতেন। তারা এর ব্যবহারে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েন যে, কোম্পানির একজন স্বল্প বেতনের সাধারণ কর্মচারিও এদেশে যাতায়াতের জন্য একটি পালকি রাখত এবং ব্যয়ভার বহন করত।
আধুনিক যানবাহন আবিষ্কার হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করতেন। স্টিমার ও রেলগাড়ি আবির্ভাবের পূর্বে ভারতের গভর্নর জেনারেলও পালকিতে চড়ে যাতায়াত করতেন।



বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়েতে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কনের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল। একসময় পালকিতে চড়েই নববধূ আসতো স্বামীর ঘরে। কোথাও বেড়াতে গেলে পালকিই ছিল একমাত্র বাহন। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইংরেজরা পালকিতে চড়া প্রায় বন্ধ করে দেয়। তবে ওই শতকের শেষাবধি স্থানীয় বাবু এবং অভিজাত শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ যাতায়াতের জন্য পালকিই ব্যবহার করতেন। 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহ অবস্থানকালে নিজের জমিদারি কাচারি পরিদর্শনের সময় যে পালকি ব্যবহার করতেন, তা এখনও কুঠিবাড়িতে সংরক্ষিত রয়েছে।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে স্টীমার ও রেলগাড়ি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পালকির ব্যবহার কমতে থাকে। ক্রমশ সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি এবং পশু-চালিত যান চালু হলে যাতায়াতের বাহন হিসেবে পালকির ব্যবহার কমে যায়। ১৯৩০-এর দশকে শহরাঞ্চলে মানুষে টানা রিকশার প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকির ব্যবহার প্রায় উঠেই যায়। পরবর্তীতে যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যানের চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিকশা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের অতীত ঐতিহ্য নিদর্শন হিসেবেই পরিচিত।

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।
লেখক।
কুড়িগ্রাম।
২৭/১১/২০২১






আকরাম উদ্দিন আহমেদ।।

লেখক ।।
কুড়িগ্রাম ।।
# জনাব আকরাম উদ্দিন আহমেদ হ্যালো জনতার নিয়মিত লেখক ।।
# তাঁর সকল লেখা আমাদের ব্লগ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ।।
হ্যালো জনতা ডট কম।।
hellojanata. com .

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
https://hellojanata350.blogspot.com/
# Copy and paste to your browser .
আমাদের ব্লগ —-Subscribe our blog .
https://hellojanata350.blogspot.com/
Copy and paste to your browser .
Follow us on —-
# facebook –
@ https://www.facebook.com/hellojanata/
#Twitter–
@ @BinMostanjir
# inastagram —
@ 121kamalbd
# linkedin
@ https://www.linkedin.com/feed/

## hellojanata.com ##

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।