বাঙলা বানানে ভাইরাস-১৪ - আবদুল হাকিম ।।

 ## A hellojanata.com Presentation . ## 


'বাঙলা বানানে ভাইরাস'-

১৪- 

আবদুল হাকিম ।।

বাঙলা বানানে ভাইরাস।।

১৪-
আবদুল হাকিম ।।
প্রথম লেখা – ২০০৩
সঙস্করন – ২০২১

এমন একটা পথ কি বের করা যায় না, যে পথে হাঁটলে উচ্চ শিক্ষিত, সাধারন শিক্ষিত আর অল্প শিক্ষিত সবাই একই বানানের দ্বারপ্রান্তে পৌছতে পারে । ব্যাকরন আর ধ্বনিতত্ব কি নিজেকে একটু ছাড় দিয়ে সবার জন্য সহজসাধ্য ও গ্রহনযোগ্য একটা পদ্ধতি আবিস্কার করতে পারে না ? বাঙলা একাডেমি কি এ ব্যাপারে কোন বৈপ্লবিক ভুমিকা নিতে পারে না ? কোন জটিল বা কঠিন শব্দ না । সহজ সরল আর সাধারন শব্দগুলোর কথাই বলছি । যেমন ধরুন – বাড়ি, গাড়ি, পাখি, জরুরি, তৈরি, সরকারি, রঙ, সাদা ইত্যাদি । কথাগুলো অনেকের কাছেই নতুন মনে হচ্ছে । হ্যা নতুনই । সমস্যা সমাধানে নতুন পদক্ষেপ নিতেই হয় । বিপ্লব কখনো মসৃন পথে আসে না । বন্ধুর পথ পার হয়েই নতুনের আগমন । ধুলো থেকে পা বাচাতে পুরো দেশের ধুলো ঝেটিয়ে বিদেয় করতে গিয়ে মহা বিপত্তি ঘটানোর চেয়ে মুচির পরামর্স মতো জুতো দিয়ে পা দুটো মুড়িয়ে নেয়াইতো বুদ্ধিমানের কাজ । যতদিন মুচির পরামর্স না নেয়া যাবে, ততদিন নিজের ভাষার নাম চার রকম, আর জাতির নাম ছয় রকম লিখে যেতেই হবে ।

একবার মনে হল, দুর ছাই, যে যেমন ইচ্ছে লিখুকগে, আমার কি ? আমি প্রচলিত যে বানান চলছে, গুনিজন যেভাবে লিখে আসছেন, সেভাবেই লিখব । আবার নিয়ে বসলাম আমার সেই চিত্রনাট্য । এটাকে ভেঙেচুরে উপন্যাস বানাতে হবে । কিনতু না । আবারো হোচট খেলাম । হোচট খেলাম একটা গুরুত্বপুর্ন শব্দের বানান নিয়ে । যে শব্দটির সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সঙস্কৃতি । শব্দটি হ’ল “ শহিদ “ । আমরা জানি এ শব্দটি সাধারনত এভাবেই লেখা হয়, ” শহীদ ” । কিনতু অনেক জায়গাতেই খুজে পেলাম এভাবে, ” শহিদ ” । অভিধানে খুজতে গিয়ে পেলাম দু’রকমই । এ’তো আর এক ঝামেলা । অভিধান এখানে সততার পরিচয়ই দিয়েছে বলতে হবে । অভিধান নিজ থেকে কোন পরিবর্তন বা সৃষ্টি করতে পারে না । তার হাত পা বাধা । ভাষার গতি’কে অনুসরন করেই অভিধান’কে চলতে হয় । কিন্তু এখন ? এখন আমি কোনটা লিখব ? খুজতে খুজতে খুজে পেলাম স দিয়ে লেখা ” সহিদ ” । বাহ্‌ ! শহিদ দিবসের প্রভাত ফেরির ব্যানারে দেখতে পেলাম – “ সহিদ দিবস “ লেখা । অনেকে নিজের নাম লেখেন এভাবে – “ সহিদ “ । তাহলে ? ধুত্তুরি ! এ’তো এক মহা বিপদ । তিন রকম বানানে একই শব্দ । গুনিজনদের কাছে হয়তো এর ব্যাখ্যা আছে । কিনতু আমি দুঃখিত । আমি মেনে নিতে পারলাম না । মনের ভিতর একটা খচখচানি রয়েই গেল । বানানের এই গরমিল দেখে নিজের কাছেই একটা অপরাধবোধ সবসময়ই ঘুরপাক খেতে লাগলো । নিজের মনের সাথে আপোষ করতে পারলাম না । মনে হলো এটাতো পুরো জাতির জন্যই একটা লজ্জা ।

বাঙলা ভাষায় এমন বহু শব্দ আছে যার বানান এক, কিনতু মানে একাধিক । তেমনি আরও কয়েকটা শব্দের কথা এখানে আবার একটু বলি । যেমন – ময়না মানে ময়না পাখি হতে পারে, আবার ময়না তদন্ত হতে পারে । দান মানে পাত্র হতে পারে, আবার দান করাও হতে পারে । ছিপ মানে নৌকো হতে পারে, আবার মাছ ধরার ছিপ হতে পারে । তুলা মানে কার্পাস বা সিমুল তুলা হতে পারে, আবার দাড়িপাল্লাও হতে পারে । বাস মানে বস্ত্র হতে পারে, বাসস্থান হতে পারে, সুগন্ধ হতে পারে । ঝাঁপ মানে ঝাঁপ দেয়া হতে পারে, আবার দোকান বা ঘরের দরজা হতে পারে । পালক মানে পালনকর্তা হতে পারে, পাখির পালক হতে পারে । পালা মানে ডাল হতে পারে, পালন করা হতে পারে, নাটক বা যাত্রা’র পালা হতে পারে । পাড় মানে নদির কিনার হতে পারে, সাড়ির পাড় হতে পারে । কিস্তি মানে বড় নৌকা হতে পারে, দাবা খেলার চাল হতে পারে, ঋন পরিসোধের মেয়াদ হতে পারে । চাল মানে ঘরের ছাদ হতে পারে, কৌসল বা ফন্দি হতে পারে । তালি মানে হাততালি হতে পারে, জামা কাপড়ের পট্টি হতে পারে । পড়া মানে কোন কিছু পাঠ করা হতে পারে, আবার উপর থেকে নিচে পড়ে যাওয়া হতে পারে । এমনি শব্দ আরও অনেক আছে । তাহলে ঈ’র বদলে ই, ঊ’র বদলে উ, ণ’র বদলে ন, শ’র বদলে স আর ং এর বদলে ঙ দিয়ে লিখলে মানে বোঝা যাবেনা, একথা কি মেনে নেয়া যায় ? তাছাড়া উচ্চারনের বেলায় স বা শ উচ্চারন যদি কোন কোন সময় ছ’র মত হতে পারে তবে ই’র উচ্চারন ঈ’র মত আর উ’র উচ্চারন ঊ’র মত হতে দোষ কোথায় ? একই অর্থবোধক শব্দের সাত রকম বানান চলতে দেয়া যায় না । এটা খামখেয়ালিপনা । ভাষার প্রতি চরম উদাসিনতা । – ( চলবে )

আবদুল হাকিম ।।
প্রবাসী লেখক ।।
বাল্টিমোর ,ইউ এস এ ।।
# লেখক আবদুল হাকিম হ্যালো জনতা ডট কম এর নিয়মিত লেখক।।
# তাঁর লেখা আমাদের ব্লগ এবং নিচের সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ।।
হ্যালো জনতা ডেস্ক ।।
হ্যালো জনতা ডট কম।।
hellojanata. com .

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
https://hellojanata350.blogspot.com/
# Copy and paste to your browser .
আমাদের ব্লগ —-Subscribe our blog .
https://hellojanata350.blogspot.com/
Copy and paste to your browser .
Follow us on —-
# facebook –
@ https://www.facebook.com/hellojanata/
#Twitter–
@ @BinMostanjir
# inastagram —
@ 121kamalbd
# linkedin
@ https://www.linkedin.com/feed/

## hellojanata.com ##




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।