বায়স্কোপের নেশায় আমায় ছাড়েনা!!২৩ # আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

 ## A hellojanata.com Presentation . 





প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ২৩ - 

বায়স্কোপের নেশায় আমায় ছাড়েনা!!
# আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

বায়স্কোপের নেশায় আমায় ছাড়েনা!
'তোমার বাড়ির রঙ্গের মেলায়
দেখেছিলাম বায়স্কোপ
বায়স্কোপের নেশায় আমায় ছাড়েনা।'

আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য 'বায়স্কোপ'। অনেকের কাছে নস্টালজিক, নেশা ধরা এই বায়স্কোপ নিয়ে বর্তমান সময়েও শিল্পীরা গান গেয়েছেন। এদের মাঝে দলছুট ব্যান্ডের এই গানটি ছিল অসাধারণ।
www. hellojanata.com

বায়স্কোপের ছবি আর সুরেলা কন্ঠের বর্ণনায় জীবন্ত হয়ে উঠতো এক অজানা পৃথিবী।
চার কোনা একটি টিনের বাক্সে গোলাকৃতি ৪ থেকে ৬টি কাচের জানালা। বাঁশি বাজিয়ে আহ্বান জানিয়ে দুলদুল ঘোড়া, মক্কা-মদিনা, আজমির শরীফ, ক্ষুদিরামের ফাঁসির ছবি ইত্যাদি দেখানো হতো বায়স্কোপে। দেশ বিদেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, রাজা বাদশা, জনপ্রিয় নায়ক নায়িকা, বিভিন্ন ধর্মীয় পবিত্র স্থাপনা, মৃত্যুর পরের নানা কাল্পনিক কাহিনীর ৩৫ থেকে ৪০টি ছবি জোড়া দিয়ে লাগানো হতো। বাক্সের মধ্যে দুই পাশে দুটি ঘুড়ির লাটাইয়ের মত থাকত যা পেচিয়ে স্থির ছবি চলমান রেখে প্রদর্শন করা হত। বায়স্কোপওয়ালা হাত দিয়ে হাতল ঘুরাতে থাকে আর সুর করে ছবির বর্ণনা দিতে থাকে।

"কী চমৎকার দেখা গেলো
ঢাকা শহর আইয়া পড়লো ....."
মীরজুমলার কামান দেখো।
সদরঘাটের জাহাজ দেখো...."
www. hellojanata.com

আনেকের মনে আছে আব্দুল জব্বার খান সাহেবের "জোয়ার এলো" চলচ্চিত্রে বায়স্কোপের পাশে বায়স্কোপওয়ালা সাইফুদ্দিন দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নেচে নেচে গাইছেন-

"দুনিয়া দেখ দু'আনা দু'আনা
এমন খেলা হবেনা এমন মজা পাবেনা
দুনিয়া দেখ দু'আনা দু'আনা
আরে নগর গেল,
নগর গেল শহর গেল গেল কত বন্দর
দূর দেশের জাহাজ এসে ঘাটে করল নোঙর
দেরী করলে হবেনা জলদি করে এসোনা
দুনিয়া দেখ দু'আনা দু'আনা......"

বাংলাদেশে ৭০ এর দশকেও শহরে ও গ্রামে এবং গ্রাম‍্য মেলাতে নিয়মিত দেখা যেত বায়স্কোপওয়ালারা কাঁধে বায়স্কোপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা এটা দেখার জন্য মা-বাবার কাছে আবদার করছে। বাংলার চিরায়ত আদি বিনোদন মাধ্যম ছিল এই বায়োস্কোপ। আধুনিক প্রযুক্তির আগ্রাসনে বর্তমানে বলতে গেলে বিলুপ্ত এক সময়ের বেশ জনপ্রিয় এই শিল্পটি। টিভি, সিনেমা, ইন্টারনেট, স্মার্ট ফোন, ডিভিডি, ইউটিউব সহ নানা বিনোদন মাধ্যম মানুষের হাতে আসায় বায়োস্কোপ এখন কেবলই ইতিহাস

ইউরোপে ১৫ থেকে ১৭ শতাব্দীতে বায়োস্কোপ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৮৯৪ সালের পর এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপি এর প্রদর্শনী শুরু হয়। অনেকে বায়োস্কোপকে চলচ্চিত্র আবিস্কারের পূর্ব রুপ বলে ধারণা করেন।

১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের কলকাতায় বাঙালিদের মধ্যে প্রথম বায়োস্কোপ কোম্পানি গঠন করেন মানিকগঞ্জ জেলার বগজুরী গ্রামের হীরালাল সেন।তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির নাম দেন 'দ্য রয়েল বায়োস্কোপ কোম্পানি'। এই বায়স্কোপের সব চেয়ে সরল সংস্করণ হল গ্রাম বাংলার কাঁধে করে বয়ে নিয়ে বেড়ানো এই ছোট বায়স্কোপের বাক্স। কলকাতা শহরের কিছু বায়স্কোপে ছোট প্রজেক্টরও ব্যবহার করা হতো।

তবে আনন্দের খবর হোল চোখ ধাঁধাঁনো আধুনিকতার এমন সময়েও গ্রামীণ জনপদে বায়োস্কোপ দেখতে মানুষের ভীড় চোখে পড়ে বিভিন্ন মেলায়। তবে এধরনের প্রদর্শনী বিরল।


বায়োস্কোপ আমাদের সংস্কৃতির শিকড়, কিন্তু আমরা আধুনিকতার ছোয়ায় তা ভূলতে বসেছি। বিশেষ করে স্যাটেলাইটের যুগে টিভি, মোবাইল, ইন্টারনেট এর প্রতিযোগীতায় আমাদের দেশীয় প্রযুক্তিনির্ভর বায়োস্কোপ টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারী উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ। নতুবা এ বায়োস্কোপ জাদুঘরে গিয়ে এ প্রজন্মের সন্তানদের দেখাতে হবে।

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

১১/১২/২০২১



——————
## ~~~~~~~ ভুলতে না পারার গল্প ~~~~~~~
## লক্ষ্য রাখুন –’ভুলতে না পারার গল্প’-কেমন ছিল আজকের এই দিনটি?১৬ই ডিসেম্বর-আমাদের সেই মহান একাত্তুরে-! – প্রকাশিত হবে ১৬ই ডিসেম্বর সকালে।। ##

—————–——-

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

লেখক ।।
কুড়িগ্রাম ।।
# জনাব আকরাম উদ্দিন আহমেদ হ্যালো জনতার নিয়মিত লেখক ।।
# তাঁর সকল লেখা আমাদের ব্লগ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়  ।।
হ্যালো জনতা ডট কম।।
hellojanata. com .

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
https://hellojanata350.blogspot.com/
# Copy and paste to your browser .
আমাদের ব্লগ —-Subscribe our blog .
https://hellojanata350.blogspot.com/
Copy and paste to your browser .
Follow us on —-
# facebook –
@ https://www.facebook.com/hellojanata/
#Twitter–
@ @BinMostanjir
# inastagram —
@ 121kamalbd
# linkedin
@ https://www.linkedin.com/feed/

## hellojanata.com ##

## আপনি মন্তব্য করতে পারেন । তবে প্রথমে ব্লগ টি সাবস্ক্রাইব করে , তবেই মন্তব্য করুন । ব্লগ সাবস্ক্রাইব না করলে মন্তব্য মুছে ফেলতে আমরা বাধ্য হব । ধন্যবাদ । এডমিন ।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।