‘ভুলতে না পারার গল্প’-কেমন ছিল আজকের এই দিনটি?১৬ই ডিসেম্বর-আমাদের সেই মহান একাত্তুরে–!!

 ## A hellojanata.com Presentation. 

নির্মল হাসি হাসতে থাকা আর আমাদের দেশ উপহার দেওয়া গর্বিত বাঙলা মায়ের সেনা!কে এই মুক্তিযোদ্ধা ?? আমরা যে হারিয়ে ফেলেছি ওদের!!

মুসা কামাল ।। 
১৬ই ডিসেম্বর ২০২১।। 
গত মার্চ থেকেই গোলাগুলির বা গ্রেনেডের বা মর্টারের শব্দে পরিচিত সবাই ।দিনে দুপুরে,আর রাত বিরেতে,কাছে আর দূরে, হাল্কা আর ক্রমাগত গুলির শব্দ ভেসে আসতো। শব্দগুলোর সাথে মুক্তিযোদ্ধা দের একটা যোগসূত্র তো ছিলই!কাজেই একদিন গুলির শব্দ না পেলে কেমন যেন লাগতো!মনে হতো কি যেন হচ্ছে না । মনে হতো মুক্তিযোদ্ধারা আজ কোথায় গেল তাঁরা , আজ এখনো এলো না !   সেই ক্রমাগত গুলির শব্দ আজ ঢাকার সন্নিকটে ।কাছে , আরো কাছে ,এগিয়ে এসেছে ওরা !  
রাজধানী ঢাকা শহর তখন কুয়াশার চাদরে মোড়ান। প্রচণ্ড শীত।কুয়াশা পড়তো অনেক বেলা অবধি।আর এরই মাঝে মুক্তিবাহিনী+ভারতীয় বাহিনী – যাদের নামকরন করা হয়েছিল’মিত্র বাহিনী’,সেই মিত্র বাহিনী তিন/চার/পাঁচ দিক থেকে রাজধানী ঢাকার চারিধারে সমবেত হতে থাকে।তাঁদের মনে ছিল — চলো চলো ঢাকা চলো,ঢাকা – দখল করো’ রব,জোর কদমে এগিয়ে এসেছিল তাঁরা ।বিজয় তখন সমাসন্ন।


একাত্তরেরএ সময়ে ঢাকা বিজয়ের লক্ষে প্রচণ্ড হামলা চলছিল রাজধানীর চারদিকে।বিশেষত তিন/চার/পাঁচ/ছয় টি আক্রমনের শলাকার মুখে নিয়াজিদের হৃৎকম্প তখন তুঙ্গে। ১৩ ডিসেম্বর রাত থেকে ১৪ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত ঢাকার পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে মিত্রবাহিনীর কামান অবিরাম গোলা ছুড়েছে। গভর্নর মালিকের মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করে আশ্রয় নিয়েছে রেডক্রসে। সে সময়ের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ।এটি ছিল ডিসেম্বরের ১০ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত ।


এতে নিয়াজির অবস্থা আরও করুণ হয়ে ওঠে।জেনারেল নিয়াজি বারবার নিরাপদ আত্মসমর্পণ নিশ্চিত করতে ভারতের সেনাপ্রধান মানেকশ’র সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। আত্মসমর্পণের পর জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ব্যবহার নিশ্চিত হতে চাইছেন জেনারেল নিয়াজিসহ পাকিস্তানি জেনারেলরা।মুক্তি বাহিনীর সদস্য দের ভয় পাচ্ছিলেন পাকিস্তানি এই জেনারেল।

এদিকে ১১ই ডিসেম্বরে টাঙ্গাইলের দিকে কাদের সিদ্দিকির বাহিনীর সহায়তায় ভারতীয় বাহিনী ছত্রী সেনা ড্রপ করে ।
মেজর জেনারেল সুখওয়ন্ত সিং তাঁর বই ‘ইন্ডিয়াজ ওয়ারস সিন্স ইন্ডিডিপেন্ডেন্স’-এ লিখেছেন, “৫০ ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্যারা ব্রিগেড গ্রুপকে আগেই ব্যারাকপুর, পানাগড় আর কলাইকুন্ডায় জড়ো করে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে থেকেই ২ নম্বর (মারাঠা) প্যারা ব্যাটালিয়নকে বেছে নেওয়া হল টাঙ্গাইলের জন্য। প্রয়োজনীয় অস্ত্র আর রসদ ব্রিগেড গ্রুপের সহযোগী ইউনিটগুলি থেকে দেওয়া হয়েছিল – যাতে স্বাধীনভাবে সম্মুখ সমরের জন্য সবকিছু তাদের সঙ্গেই থাকে। ব্যাটালিয়নটির নেতৃত্বে ছিলে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল কুলওয়ন্ত সিং পান্নু।”
“মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এমন একটা জায়গা প্যারা-ড্রপিংয়ের জন্য বাছা হয়েছিল, যার পূব দিকে মধুপুর জঙ্গল, মাঝে মাঝেই পুকুর-জলা আর গ্রামের বসতবাড়ি রয়েছে।" কাদের সিদ্দিকী পরিচালিত এ অঞ্চলের  মুক্তি বাহিনীর( কাদেরিয়া বাহিনী ) সঙ্গে যোগাযোগ করে এমন একটা জায়গা প্যারা-ড্রপিংয়ের জন্য বাছা হয়েছিল, যার পূব দিকে মধুপুর জঙ্গল, মাঝে মাঝেই পুকুর-জলা আর গ্রামের বসতবাড়ি রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুঙ্খানুপঙ্খ জানা যাবে --বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম রচিত ' স্বাধীনতা -৭১' নামক অনন্য প্রকাশনীর বইতে ।  


১১ তারিখ দুপুর আড়াইটের সময়ে দমদমের সিভিলিয়ান বিমানবন্দর আর কলাইকুন্ডার এয়ারবেস থেকে ৫০টি বিমান আকাশে উড়েছিল,” লিখেছেন মেজর জেনারেল সুখওয়ন্ত সিং।# দমদম- নেতাজি সুভাষ বোস বিমানবন্দর কলকাতা।
প্যারাট্রুপারদের বিমানগুলি পৌঁছানর আগে কয়েকটি মিগ সেদিন টাঙ্গাইলের আকাশে চক্কর কাটছিল।
ভূমি থেকে পাঠানো সঙ্কেত দেখে শুরু হল অপারেশন।
প্রথমেই বিমান থেকে ফেলা হল রসদ, তারপর ভারী অস্ত্রশস্ত্র আর জিপ প্রভৃতি, আর একেবারে শেষে নামতে শুরু করল ছত্রীসেনা বা প্যারাট্রুপাররা।এখানে জনগন এয়ার ড্রপের কিছু আগেই বিষয়টি জানতো ফলে ওই এলাকায় জনগন আকাশ থেকে নেমে আসা সেনাদের ব্যাপক স্বাগত জানায়-( ছবি )।

#সমরবিদ রা ধারনা করেন যে, এই ছবি দেখেই চিন্তিত এবং ভয় পেয়েছিলেন জেনারেল নিয়াজি #

দুটি বিমান থেকে সেনা আর রসদ সেদিন নামানো যায় নি, কিন্তু বাকি ৪৮টি বিমানই সেদিন সফল হয়েছিল বলা চলে।
১২/১৩ তারিখ থেকেই রেডিও তে বার বার ভেসে আসছিল ভারতীয় জেনারেল ম্যানেক’শ”র গলা – ‘ আবদুল্লাহ( জেনারেল আবদুল্লাহ নিয়াজি) হাতিয়ার ডাল দো, হামারা জওয়ান তুমকো চারো তরফ সে ঘির লিয়া ‘। 


## মাঝে জেনারেল ম্যানেক’শ ।##
সারা দিনমান সেই ঘোষণা চলছিল ।আর সেটি চলছিল পাচ/ দশ মিনিট পরে পরেই ।ঢাকায় আত্ম সমর্পণের আহবান জানিয়ে প্লেন থেকে হ্যান্ড বিলও ফেলা হয়(ঢাকা এলাকা-১১ ডিসেম্বর- ৭১ ।

এ সময় ক্রমাগতই সারা বাংলাদেশেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছিল মিত্র বাহিনী( মুক্তিযোদ্ধা + ভারতীয় সেনা)। পালিয়ে বাঁচতে চাইছিল রাজাকার রা। অনেকেই ধরা পরছিল সারা দেশেই। শাস্তিও পাচ্ছিল তারা তৎক্ষণাৎ।কিছু আবার পালিয়ে বাঁচল।কিছু রাজাকার,আলবদর,জামাতী কে লুকাতে সাহায্য করে দেশের কেউ কেউ । ইতিহাস বলে সেই কার্যক্রম ছিল একটি ‘বিশেষ ভুল’ ।
———————————


## ধরা পরা রাজাকার ।##
———————————


## মুক্তিবাহিনী- চলমান যুদ্ধের মাঝেই প্রস্তুতি পর্ব ।##
———————————
মিত্রবাহিনীর কামানের গোলা নিক্ষেপ হয় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেও। সে গোলার আওয়াজে কাঁপছে গোটা শহর। ঢাকার সবাই বুঝল, আর রক্ষা নেই। গভর্নর মালিক সেদিন সকালেই পরিস্থিতি বিবেচনার জন্য গভর্নর হাউসে মন্ত্রিসভার এক জরুরী বৈঠক ডাকলেন। বৈঠক বসল বেলা ১১টা নাগাদ। মিত্রবাহিনীও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জেনে গেল এই বৈঠকের খবরটা। কয়েক মিনিটের মধ্যেই একঝাঁক ভারতীয় জঙ্গী বিমান গভর্নর হাউসের ওপর রকেট ছুড়ল। গোটা পাঁচেক গিয়ে পড়ল গভর্নর হাউসের ছাদের ওপর। মালিক ও তার মন্ত্রীরা ভয়ে কেঁপে উঠলেন। মিটিংয়ে উপস্থিত চিফ সেক্রেটারি, আইজি পুলিশসহ বড় বড় অফিসাররা ভয়ে যে যেমনি পারলেন পালালেন।
—————-


## ঢাকা গভর্নর হাউসে রকেট আক্রমনের পরের চিত্র ।##
—————-

## শিল্পীর তুলিতে ঢাকা গভর্নর হাউস আক্রমনের চিত্র। শিল্পী অজ্ঞাত ।##
—————-
বিমান হানার পর গভর্নর মালিক পাকিস্তানি মিত্রদের সঙ্গে আবার বসলেন। সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির প্রতিনিধি রেনডের কাছে আশ্রয় চাইলেন। রেনড ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলকে রেডক্রসের অধীনে ‘নিরাপদ এলাকা’ করে নিয়েছেন। বহু বিদেশি এবং পশ্চিম পাকিস্তানি আশ্রয় নেয় ওই হোটেলে।
এ ঘটনার পর নিয়াজির অবস্থা আরও করুণ হয়ে ওঠে।দ্রুতই এগিয়ে আসছে মিত্র বাহিনী। আক্রমন জোরদার।প্রধান লক্ষ্য কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্ট আর পাকিস্তানী সেনা। মাঠের যুদ্ধরত সেনা আর জেনারেলদের অবস্থা করুন। বিভিন্ন জায়গায় আত্মসমর্পণ করছে তারা। নিয়াজি তখনও মার্কিনিদের ভরসায় মুখে বলছে, শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। নিয়াজি জানতেন-তার কাছে খবর ছিল-মার্কিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরের দিকে এগুচ্ছে ।খবরটি চার-পাঁচদিন আগে থেকেই জানা ছিল নিয়াজির। । গোটা দুনিয়ায় তখন সপ্তম নৌবহরের মাল্লাক্কা প্রণালি থেকে বঙ্গোপসাগরে আগমন নিয়ে জোর জল্পনা-কল্পনা চলছে।
মার্কিন সরকার যদিও ঘোষণা করল যে, কিছু আমেরিকান নাগরিক অবরুদ্ধ, বাংলাদেশ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্যই সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ তা বিশ্বাস করল না। সবার মনে তখন প্রশ্ন, প্রেসিডেন্ট নিক্সন কী ইয়াহিয়াকে রক্ষার জন্য মার্কিন নৌবহরকে যুদ্ধের মাঠে নামাবেন? ঠিক কি উদ্দেশ্যে মার্কিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে এসেছিল, তা আজও রহস্যাবৃত। তবে এই সময়েই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পারমানবিক শক্তিচালিত নৌবহর ভারত-বাংলাদেশের পক্ষে মার্কিন নৌবহরের মুখোমুখি অবস্থান নেয়।পিছু হটতে বাধ্য হয় মার্কিনীরা।এর ফলেই নিয়াজির মনের শেষ আশা শেষ হয়ে যায় ।



## ঢাকার আকাশ থেকে ফেলা লিফলেট ##

মিত্রবাহিনী তখনও ঠিক জানে না যে, ঢাকার ভেতরের অবস্থাটা কী। পাকবাহিনী কিভাবে ঢাকার লড়াইয়ে লড়তে চায় এবং ঢাকায় তাদের শক্তিই বা কতটা। মিত্রবাহিনী মনে করল, ঢাকার ভেতরে লড়াই করার জন্য যদি সেনাদের এগিয়ে দেওয়া যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে যদি বিমান আক্রমণ চালানো হয়, তবে লড়াইয়ে সাধারণ মানুষও মরবে। মিত্রবাহিনী এটা কিছুতেই করতে চাইছিল না। তাই ওইদিনই তারা একদিকে যেমন ফের পাকবাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহবান জানালেন এবং তেমনি অন্যদিকে ঢাকার সাধারণ নাগরিকদের অনুরোধ করলেন, আপনারা শহর ছেড়ে চলে যান। উত্তর এবং পূর্ব- রাজধানীর দুদিকেই তখন আরও বহু মিত্রসেনা এসে উপস্থিত।



ঠিক এই সময়ে মেজর হায়দার তাঁর মুক্তি বাহিনীর ছেলেদের নিয়ে ঢাকার উপকণ্ঠে কমলাপুর,মুগদা, বাসাবো-এই এলাকা সমুহে রাতারাতি অবস্থান গ্রহন করেন । তাঁদের এহেন অবস্থান গ্রহনের একটি মাত্র উদ্দেশ্য ছিল যদি ঢাকায় স্ট্রিট ফাইট হয় তবে মেজর হায়দার ও তাঁর দল সেই যুদ্ধ করবেন । একই সময়ে মেজর সফিউল্লাহ তাঁর বাহিনী নিয়ে ভৈরব পেরিয়ে এসেছেন। তিনি সে সময় ঢাকা অভিমুখে রওয়ানা হয়েছেন । পাকিস্তানি মেজর জেনারেল রহিম খান এ সময় ভৈরব থেকে ঢাকার পথে পিছু হটতে থাকেন,ফেরার পথের সবকিছু জ্বালিয়ে আর উড়িয়ে দেয় মেজর জেনারেল রহিমের অনুগত দল।এ সময় দ্রুতই তাদের পিছু ধাওয়া করছেন মেজর সফিউল্লাহ।মেজর সফিউল্লাহ খুব দ্রুতই ঢাকায় পৌঁছাতে চাচ্ছিলেন । কিন্তু পথের দূরত্ব আর প্রতিকুলতা ১৬ই ডিসেম্বর বিকাল ৪ টার মধ্যে তাঁকে ঢাকায় পৌঁছাতে বিলম্বিত করে ।



এদিকে সেই চূড়ান্ত সময়ে বাঘা কাদের সিদ্দিকি মিরপুরের সন্নিকটে এসে হাজির ছিলেন তাঁর বাহিনী নিয়ে । কাদের সিদ্দিকির সাথে জেনারেল নিয়াজির সাক্ষাত হয় ১৬ই ডিসেম্বর দুপুর তিনটার কিছু পূর্বে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়াজির অফিসে । এ সময় ভারতীয় সামরিক অফিসাররাও ছিলেন সেখানে । নিয়াজি কাদের সিদ্দিকির পরিচয় জানতে পেরে তড়াক করে দাড়িয়ে যান । কাদের সিদ্দিকির দিকে হাত এগিয়ে দেন । কাদের সিদ্দিকি ঘৃণা ভরেই নিয়াজির হাত ফিরিয়ে দেন এবং হাত মেলান নাই ।

এই সময়ের ক’দিন আগেই ( ৭/৮ ডিসেম্বর ) ঢাকার আকাশে ভারতীয় ও পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ‘ডগ ফাইট’ হয়,(যার কোন ছবি পাওয়া যায় না) এতে পাকিস্তান এয়ার ফোস শেষ হয়ে যায় ।
অপরদিকে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বেদনা বিধুর দিন। মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে বাঙালি জাতিকে চিরতরে মেধাশূন্য ও পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্যে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, আইনজীবী ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি পেশাজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়।


১৪ ডিসেম্বর দখলদার বাহিনী যখন ঢাকায় নির্দয়ভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা করছে, ঠিক তখন মিত্র বাহিনী ঢাকার উপকণ্ঠে তুরাগ নদীর পশ্চিম পাড়ে পৌঁছে গেছে।পশ্চিম ও পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে ঢাকাকে ঘিরে ফেলে মুক্তিবাহিনী তৈরি করে কালিয়াকৈর-সাভার-মিরপুর-ঢাকা বেষ্টনী।
অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধের 2 নম্বর সেক্টরের মেজর হায়দারের যোদ্ধারা মেজর হায়দারের নেতৃতে ১৪ ডিসেম্বর রাতে পৌঁছে গিয়েছে ঢাকার বাসাবো ,কমলাপুর ,মুগদা এলাকায় এবং দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি দল ডেমরায়।


# ছবিটি যশোর রোডের ।#
এদিনই সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান পূর্বাঞ্চলীয় দখলদার বাহিনী প্রধান নিয়াজী ও গভর্নর ড. মালিকের কাছে যুদ্ধ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে এক তার বার্তা পাঠালে চূড়ান্তভাবে ভেঙ্গে পড়ে দখলদার বাহিনীর মনোবল। তখন চূড়ান্ত বিজয় অর্জন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
আর এর ফলেই পাকিস্তান বাহিনী বিকাল চার টায় রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে ।
এ সময়েই ঢাকায় চারিদিক থেকেই মুক্তিবাহিনী প্রবেশ করতে শুরু করে ।
জনগন বেরিয়ে আসে ঢাকার রাস্তায় ।


# রেসকোর্স ময়দানের দিকে হাঁটছেন ভগ্ন হৃদয়ের জেনারেল নিয়াজি ।ছবিতে নিয়াজির বামে প্রথমেই সিভিল ড্রেসে মেজর হায়দার । নিয়াজির ডানে ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ড প্রধান লেফট্যানেন্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা । মেজর হায়দার ১৬ই ডিসেম্বর থেকেই ঢাকা টেলিভিশন থেকে ঢাকায় ঢুকে পরা মুক্তিযোদ্ধা দের কমান্ড দিচ্ছিলেন ।


আত্মসমর্পণের এই ফয়সালা করেন জেনারেল জেকভ ।


# ফয়সালার লাঞ্জ বলেও কথিত লাঞ্চে জেনারেল জেকভ [ মাঝে], জেনারেল নিয়াজি এবং একজন্ সাংবাদিক #

জেনারেল জেকভ পারিবারিক জীবনে ছিলেন একজন ইহুদি। অবস্থা এতই বেগতিক ছিল যে একজন ইহুদির কথা মেনে নিতেও পাকিস্তানি মুসলমান নামধারী জেনারেলদের দ্বিধা হয় নাই ।
জনগন ইতিমধ্যেই রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে । মিত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে( মুক্তিবাহিনী+ভারতীয় সেনা ) অভিনন্দন জানাতে থাকে তাঁরা ।
এভাবেই কেটে যায় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ।



## গ্রন্থনা— মু্সা কামাল ।।
সম্পাদক,হ্যালো জনতা ডট কম।।
## অলঙ্করন ও কোলাজ —
মুহাম্মদ মনসুরুল আজম ।।
ব্যুরো চিফ।।
চট্টগ্রাম ।।
# ছবি – সংগ্রহ ।।
# হ্যালো জনতা ডট কম ।।
# লেখাটি ফেসবুক,টুইটার,লিঙ্কেডিন ও আমাদের ব্লগে একই সাথে প্রকাশিত ও প্রচারিত ।।
———
### আরো পাবেন সুলেখক দেওয়ান মাবুদ আহমেদের – ‘১৫ই ডিসেম্বর১৯৭১- ব্লাক আউটের ঘুটঘুটে আঁধার রাত’ — জী আজকেই পাবেন সেই লেখা ।।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।