বাঙলা বানানে ভাইরাস -১৭ - আবদুল হাকিম।।

 



বাঙলা বানানে ভাইরাস

 ১৭

আবদুল হাকিম ।।

 

প্রথম লেখা - ২০০৩ 

সঙস্করন - ২০২১   

www. hellojanata.com


তাই বলে ব্যাকরন,  ধ্বনিতত্ব বা অভিধান যে অপ্রয়োজনিয়, তা কিন্‌তু মোটেই না । সেই হ্যালহেড সাহেবের পর রামমোহন রায়ই প্রথম বাঙালি,  যিনি বাঙলা ব্যাকরন লিখেছিলেন । তবে ওই ব্যাকরন, বাঙলা ব্যাকরন ছিল সন্দেহ নেই, তবে তা ছিল ইঙলিস আর সঙস্কৃত ব্যাকরনের আদলে । হতেই পারে । নতুন কোন সঙবিধান বা আইন প্রনয়ন করতে হলে আসেপাসের আরও দু’চারটে সঙবিধান বা আইনের বই ঘাটাঘাটি করতেই হয়, সেখেত্রে সেগুলোর প্রভাব নতুন সঙবিধান বা আইনে পড়তেই পারে । তবে সুক্ষ ও পান্ডিত্যপুর্ন ব্যাখ্যা বিস্লেষন করতে গিয়ে তখন হয়তো তাঁদের পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব হয়নি যে, সধারন বাঙলাভাষির পক্ষে কোনদিনই ন আর ণ / ই আর ঈ / উ আর ঊ’র সুক্ষ পার্থক্য অনুধাবন করে, ওই ভাষারিতি যথাযথ ভাবে অনুসরন করা সম্ভব হবে না । এর প্রমান আমরা একটু চোখ মেলে আসেপাসে তাকালেই দেখতে পাবো । তবে ওই ব্যাকরন যদি সুধুমাত্র উচ্চসিক্ষিত বা পন্ডিতস্রেনির জন্যই প্রনয়ন করা হয়ে থাকে, তবে তা ভিন্ন কথা ।  তবে আজ পর্যন্ত বাঙলা ব্যাকরন বিসারদ বা ভাষাবিদরা খুব যত্নের সাথে ওই ব্যাকরন রক্ষনাবেক্ষন ও অনুসরন করে চলেছেন কিনতু এখন মনে হচ্ছে, ওই ব্যাকরন বা ধবনিতত্ব প্রতিটি বাঙলাভাষির পক্ষে পুরোটা মেনে চলা সম্ভব হচ্ছেনা । অথবা একটু ঘুরিয়ে বলা যায়,  বাঙলা ব্যাকরন প্রতিটি বাঙলাভাষির প্রয়োজন থেকে কোন কোন ক্ষেত্রে অনেকটা দুরে সরে আছে । যাকে বলা যায়, বাঙলা ব্যাকরন আদৌ গনমুখি নয় ।

www. hellojanata.com


অভিধানের সাহায্য নিতে গেলেও অনেক সময় পুরোটা সমাধান পাওয়া যায়না । যেমন অভিধানে গাড়ি, বাড়ি, পাখি বা সরকারি সব্দগুলোতে ই-কার বা ঈ-কার দুটোই সঠিক বলে দেখানো হয়েছে, যা সাধারন মানুষের কাছে বড়ই বিভ্রান্তিকর ও অস্বস্তিদায়ক এবঙ হাস্যকরও বটে । অক্ষরে অক্ষরে উচ্চারন বা অর্থ ধারন খমতা যদি ভিন্ন হয়, তবে একই অর্থবোধক শব্দের একাধিক বানান কিভাবে শুদ্ধ হতে পারে ? একই উচ্চারনে একই অর্থবোধক শব্দের বিভিন্ন বানান আমার পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব না । দুঃখিত । তবে অভিধান কিনতু এখানে সততার পরিচয়ই দিয়েছে । কারন অভিধান নিজ থেকে কিছু করতে পারে না । তার পাত পা বাধা । কিন্‌তু আমাদের মত সাধারন মানুষের জন্য প্রস্ন থেকেই যাচ্ছে,  যা একটা সমৃদ্ধ ভাষার জন্য সম্মানজনক নয় । ভাষাকে কঠিন করে,  তা থেকে সাধারন মানুষকে দুরে সরিয়ে রেখে,  একে সুধু পন্ডিতদের এক্তিয়ারভুক্ত করেই রাখা হয়েছে । ফলে সাধারন মানুষের ভাষা চর্চায় যেমন অনিহা থেকেই যাচ্ছে,  তেমনি ভাষার প্রতি স্রদ্ধা বা ভালবাসাও গড়ে উঠছেনা । অনেক’কে মাতৃভাষা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতেও দেখা যায় । অর্থাৎ যারা উচ্চশিক্ষিত বা সুশিক্ষিত তারাই সুধু নির্ভুল বানান চর্চা করবেন আর যারা সাধারন শিক্ষিত বা অল্প শিক্ষিত তারা ভুল শিখলো কি ঠিক শিখলো তাতে কার কি আসে যায় ?  তারা উচ্চশিক্ষিত বা সুশিক্ষিত হলেইতো পারে । কে করেছে মানা । তাহলে সবাইকে হয় বাঙলায় পন্ডিত বা ভাষাবিদ হতে হবে,  নতুবা একটা করে  বাঙলা অভিধান ও বাঙলা ব্যাকরন বোগলদাবা করে সবসময় চলাফেরা করতে হবে । যখনই সন্দেহ দেখা দেবে, চটকরে বোগল থেকে অভিধান বা ব্যাকরন বইটা বের করে ঝটপট দেখে নেয়া যাবে । এতে অভিধান প্রকাশনা সঙস্থার ব্যবসাও বেস জমবে ভালো । 


প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী রচিত " বাংলা বানানে অন্যায় হস্তক্ষেপ  " প্রবন্ধটিতে তিনি বলেছেন, " ------ ভাষাতো কারো ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত সম্পত্তি নয়কেবল একালের মানুষেরও সম্পত্তি নয়বহুকালের এবং অনাগত কালেরও ওইখানে হাত দেওয়ার দুঃসাহসটা কেন ? ------


ভাষা আকাস থেকে পড়েনি । ভাষা মানুষেরই সৃষ্টি । যুগে যুগে মানুষের প্রয়োজনেই এর বিবর্তন পরিবর্তন হয়েছে । সময়ের প্রয়োজনেই মানুষ এই পরিবর্তন বা আধুনিকায়ন মেনে নিয়েছে । বাঙলা ভাষার ইতিহাসের দিকে তাকালেই এ’কথার প্রমান মেলে । এখানে দুঃসাহস বা ভয় ভিতির কোন ব্যাপার নেই । ভাষা আধুনিকায়নের গতির প্রতি স্রদ্ধাসিল হয়ে বাস্তবতাকে মেনে নিতে হলে চাই বৈপ্লবিক মানসিকতা । প্রয়োজনে ব্যাকরন সঙস্কার করলেই বা ক্ষতি কি ? ব্যাকরনতো কোন ঐসি গ্রন্থ নয় যে, তাতে হাত দিলে হাবিয়া দোজখে নিক্ষিপ্ত হতে হবে । ব্যাকরনতো ভাষার জন্য এক নির্দেসিকা, যা ভাষার যুগের সাথে পরিবর্তনশিল । আর ভাষাতো মানুষের মন উদ্ভাবিত এবঙ তারপর কণ্ঠ থেকে নির্গত । - ( চলবে )  



আবদুল হাকিম ।।

লেখক ।।
বাল্টিমোর, ইউ এস এ ।।
# হ্যালো জনতার নিয়মিত লেখক ।।
## তাঁর সকল লেখা আমাদের ব্লগ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ।।

হ্যালো জনতা ডট কম ।।
hellojanata. com .
——————
## ~~~~~~~ ভুলতে না পারার গল্প ~~~~~~~




## লক্ষ্য রাখুন –’ভুলতে না পারার গল্প’-কেমন ছিল আজকের এই দিনটি?১৬ই ডিসেম্বর-আমাদের সেই মহান একাত্তুরে-! – প্রকাশিত হবে ১৬ই ডিসেম্বর সকালে।। ##

—————–——-

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
https://hellojanata350.blogspot.com/
# Copy and paste to your browser .
আমাদের ব্লগ —-Subscribe our blog .
https://hellojanata350.blogspot.com/
Copy and paste to your browser .
Follow us on —-
# facebook –
@ https://www.facebook.com/hellojanata/
#Twitter–
@ @BinMostanjir
# inastagram —
@ 121kamalbd
# linkedin
@ https://www.linkedin.com/feed/

## hellojanata.com ##

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।