প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ২২-কলের গানের ইতিকথা!!- !! # আকরাম উদ্দিন আহমেদ ।।

 # # A hellojanata.comPresentation .## 

প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ২২ –

কলের গানের ইতিকথা!!
# আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

কলের গানের ইতিকথা!!
“কে রে নরাধম তুই আমার 

বার বছরের ধ‍্যান ভঙ্গ করে দিলি।-

তোকে দিলাম এই অভিশাপ,

পুত্র শোকে তুই করবি বার বছর অনুতাপ।”

এটি হল আমার ছোট বেলায় কলের গান বা গ্রামোফোনে শোনা রুপবাণ পালায় বনে ধ‍্যানমগ্ন সাধুর একটি সংলাপ। যা আজও আমার মনে পড়ে।

সময়ের ব্যবধানে একসময় অনেক কিছুই হারিয়ে যায়। প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় এক সময়ের অপরিহার্য বিষয় ও বিলুপ্ত হয়। তেমনি একটি বিষয় হলো কলের গান। আধুনিক সিডি ও মেমোরির কার্ডের আয়োজনে চাপা পড়েছে গ্রামোফোন বা কলের গান।

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পূর্বের কথা। আমাদের বাড়ির পাশেই এক ঢাকাইয়া পরিবার থাকতো। আমাদের বাড়ির আশেপাশে বিনোদনের জন্য কোনও রেডিও ছিলনা। ঐ ঢাকাইয়া পরিবারের বাসায় একটি কলের গান ছিল। আমরা খুব আগ্রহ ভরে সেখানে “রহিম বাদশা রুপবাণ” ও “নবাব সিরাজ উদ্দৌলা”র পালা গান শুনতাম। আজকাল যেটা কল্পণাও করা যায় না।

শব্দ সংরক্ষণের জনক টমাস আলভা এডিসন। তিনি ১৮৭৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কাঠের বাক্সের ওপর চোঙা লাগানো এমন এক জিনিস আবিষ্কার করলেন। যার মধ্যে গোলাকৃতি এক বস্তুর ওপর পিন ঘোরালে শব্দ উৎপন্ন হয়। টমাস তার প্রিয় কবিতা, ‘মেরি হ্যাড আ লিটল ল্যাম্প’ পাঠ করে উদ্বোধন করেছিলেন এক যন্ত্রের। নাম দিয়েছিলেন, ফনোগ্রাফ। তার বছর দশেক পর জার্মানির বিজ্ঞানী বার্নিলার টিনফয়েল আধুনিক মোমের রেকর্ড বানিয়ে নাম দেন গ্রামোফোন। তারপর মাটির রেকর্ড থেকে প্লাস্টিকের ভাইনাল ঘূর্ণন রেকর্ড।

এডিসনের প্রিয় কুকুরকে চোঙার সামনে বসিয়ে মনোগ্রাম করে নাম দেওয়া হয়েছিল হিজ মাস্টার্স ভয়েস। সংক্ষেপে এইচএমভি। ১৮৯৮ সালে জার্মানিতে বিশ্বে প্রথম গড়ে উঠে গ্রামোফোন কোম্পানি।

১৮৮৯ সালে গ্রামোফেনের রেকর্ড বাজারজাত করা শুরু হয়। তখন এই রেকর্ডের ব্যাস ছিল ৫ ইঞ্চি। এই রেকর্ড একটি থালার উপরে রেখে হাতল ঘুরিয়ে চালানো হতো। মূলত এই রেকর্ডগুলো শব্দ তৈরি খেলনা সামগ্রীর মতো।

এরপরেই হ্যান্ডেল দিয়ে ঘোরানোর যুগের সমাপ্তি ঘটল। ৭৮ আরপিএম ঘূর্ণন গতি থেকে ৩৩ আরপিএম ঘূর্ণন গতি সেট করা হয়। ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের একটি ভাইনাল রেকর্ড ছিল। ছয়টি ছয়টি করে বারোটি গান ছিল ওই রেকর্ডে। বাকিগুলো ছিল ছোট রেকর্ড। দুটি করে উভয় পৃষ্ঠায় চারটি গান ছিল। পিন বদলানোর ঝামেলা ছিল না। সোনামুখী পিনে চলতো অনেক দিন। খুবই রিলাক্স করে যন্ত্রটি ব্যবহার করা যেত।

১৯০৭ সালে কলাম্বিয়া কোম্পানী ফাইবার দিয়ে রেকর্ড তৈরি শুরু করে। সেই রেকর্ড বাজানোর জন্য ব্যবহার হতো স্বর্ণাকৃত পিন। ১৯১৫ সালে রেকর্ডের ঘূর্ণন গতি নিদ্দিষ্ট করা হয়। যার গতি ছিল ৭৮ আরপিএম। তখন রেকর্ডের প্রতিপিঠে ৪১ মিনিটের শব্দ ধারণ করা যেত। গোড়ার দিকে গ্রামোফোন কোম্পানি ৭ ও ১০ ইঞ্চি রেকর্ড প্রকাশ করার পর ১২ ইঞ্চি রেকর্ড প্রকাশ করে। এগুলি বাজতে সময় নিত যথাক্রমে দেড়, তিন ও চার মিনিট।

ষাটের দশকের মাঝামাঝি কলের গান মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকের ঘরেই শোভা পেত। তখন এ যন্ত্র কিছুটা মোডিফাই করে বাক্সের ভেতরে জুড়ে দেওয়া হয়। যার মধ্যে গোলাকার একটি বস্তুর ওপর মাটির তৈরি চাকতির মধ্যে পিনযুক্ত একটি সর্পিল আকারে রোলার বসালেই গান বাজতে শুরু করত। তবে বাক্সটির এক পাশে একটি হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ভেতরে একটা স্প্রিংয়ে দম দিতে হতো। অনেকটা প্রাচীন ঘড়ির চাবির মতো।

ষাটের দশকে বেতারে গান প্রচারের সময় ঘোষক বলতেন, এখন গ্রামোফোন রেকর্ডের গান প্রচারিত হবে। এতেই বোঝা যায়, কলের গান কতটুকু দখল করেছিল মানুষের মন।

কালক্রমে জ্ঞানের অসামান্য অগ্রগতির ফলে নতুন প্রযুক্তির কাছে হার মেনে কলের গান বেশ কয়েক দশক আগেই বাঙালির জীবন থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে। এখন শুধু স্মৃতির বেদনা হয়ে পড়ে আছে কলের গান।
অত্যাধুনিক ডিজিটাল যন্ত্রপাতির যুগে গ্রামোফোন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নব প্রজন্ম আর প্রকৃত গ্রামোফোন বা কলের গান চিনবে না। বাংলার ঘরে ঘরে কলের গান আর কখনও বাজবে না। কেবলই ড্রয়িং রুমে এনটিক হিসাবে শোভা বর্ধন করবে।

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।
লেখক।
কুড়িগ্রাম।
০৪/১২/২০২১

——————
## ~~~~~~~ ভুলতে না পারার গল্প ~~~~~~~
## লক্ষ্য রাখুন –’ভুলতে না পারার গল্প’-কেমন ছিল আজকের এই দিনটি?১৬ই ডিসেম্বর-আমাদের সেই মহান একাত্তুরে-! – প্রকাশিত হবে ১৬ই ডিসেম্বর সকালে।। ##
—————–——-

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।।
লেখক ।।
কুড়িগ্রাম ।।
# জনাব আকরাম উদ্দিন আহমেদ হ্যালো জনতার নিয়মিত লেখক ।।
# তাঁর সকল লেখা আমাদের ব্লগ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ।।
হ্যালো জনতা ডট কম।।
hellojanata. com .

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
https://hellojanata350.blogspot.com/
# Copy and paste to your browser .
আমাদের ব্লগ —-Subscribe our blog .
https://hellojanata350.blogspot.com/
Copy and paste to your browser .
Follow us on —-
# facebook –
@ https://www.facebook.com/hellojanata/
#Twitter–
@ @BinMostanjir
# inastagram —
@ 121kamalbd
# linkedin
@ https://www.linkedin.com/feed/

## hellojanata.com ##

## আপনি মন্তব্য করতে পারেন । তবে প্রথমে ব্লগ টি সাবস্ক্রাইব করে , তবেই মন্তব্য করুন । ব্লগ সাবস্ক্রাইব না করলে মন্তব্য মুছে ফেলতে আমরা বাধ্য হব । ধন্যবাদ । এডমিন ।।





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।