মোনালিসা-লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির মোনালিসা । পার্ট ওয়ান ।একটি এমকে সংগ্রহ ও লিখনি ।

 ## A hellojanata.com Presentation 





মোনালিসা-লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির  মোনালিসা । পার্ট ওয়ান ।একটি এমকে সংগ্রহ ও লিখনি ।


‘রেনেসাঁ’ যুগের কথা ।কথাটি আসলে রেনেসাঁ নয় হবে ‘ রেনেসাস'(Renaissance)। রেনেসাঁ কথাটির অর্থ হল ‘পুনজাগরন বা নবজাগরন বা পুনর্জন্ম ‘ । সারা ইউরোপ জুড়ে মানব জাতির উন্মেষের এই নবধারা ‘রেনেসাঁ’ বা ‘নবজাগরন ‘ শুরু হয়েছিল চৌদ্দ শতক আর পনেরো শতক নিয়ে, বলতে হয় আসলে রেনেসাঁর শুরু হয়েছিল বারো শতকের পরে থেকেই । এ সময়কালে ইউরোপে শিল্প , সাহিত্য,দর্শন,শিক্ষা দীক্ষা,বিজ্ঞান,চিত্র,স্থাপত্য আর লিখনি সহ বহুবিধ বিষয়ে এক ত্রিমাত্রিক ধারার সুচনা হয় ।

স্বল্প পরিসরে রেনেসা বা এই বৃহৎ বিষয়ে বর্ণনা এক কথায় অসম্ভব তাই লেখাটিকে ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে ।
এই ‘রেনেসাঁ’ সময় ইতালি,ফ্রান্স, স্পেন,ইংল্যান্ড এবং সংলগ্ন এলাকায় কর্মে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলেন ম্যাকিয়াভিলি,সেক্সপিয়ার,কলম্বাস, শেলি, কিটস,মাইকেল এঞ্জেলো,রাফায়েল , গ্যালিলিও,লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি প্রমুখরা ।

আমরা এখানে প্রথমেই লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির একটি চিত্রকর্ম নিয়ে তথ্য ( সংগ্রহীত অবশ্যই )প্রদান করবো যদিও দ্যা ভিঞ্চি এবং তাঁর চিত্রকর্ম নিয়ে আলোচনায় এসে পড়বে ভিঞ্চির সম্পর্কে কিছু কথা ।



# লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি ।#

লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি ছিলেন একজন ভাস্কর, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ , সমরযন্ত্রবিদ। আর চিত্র শিল্পী তো অবশ্যই । তিনি মানব দেহের গঠন বা বিন্যাসের উপর উৎসাহি ছিলেন ।



# দ্যা ভিঞ্চির আঁকা চিত্রকর্ম ‘ দা ভিট্রুভিয়ান মেন’ #

আবার তিনি বিংশ শতাব্দীর অনেক বৈজ্ঞানিক আবিস্কার সমুহের নেপথ্য জনক । তিনি রহস্য করতে পছন্দ করতেন । তিনি তাঁর সকল ভাবনা চিন্তা বা চিত্র কর্মের বিষয়ে লিখে গেছেন ।তাঁর অনেক চিত্রকর্ম আছে । এ গুলোতে তিনি গোল্ডেন রেসিও ব্যবহার করেছেন । তিনি মিসরের ফারাও দের সভ্যতা বা ভারতের তাজমহলের কর্ম বা মায়ান সভ্যতার বিষয়ে জানতেন আর তাই তিনি সেই ধারা অনুসরন করেছিলেন । আজ থেকে পাঁচ শত বৎসর বা তারও বেশি আগে , তখন কি বিজ্ঞানের আজকের বাস্তবতা পৃথিবীতে ছিল ? কি ভাবে তিনি এ সব করেছেন তা এখনো চিন্তাবিদদের চিন্তার কারন ।



# দ্যা ভিঞ্চির চিত্রকর্মের ক’টি ছবি ।#

শুধু মাত্র একটি চিত্র সম্পর্কে দ্যা ভিঞ্চি কিছু লিখেন নাই । আর তা হল, তাঁর চিত্র কর্ম ‘ মোনা লিসা’ সম্পর্কে তিনি কিছুই লিখে যান নাই । এই চিত্র টির এক জায়গায় ইতালিয়ান ভাষায় লিখা আছে ‘জবাব এখানেই আছে ‘!অর্থাৎ খুঁজে নিতে হবে । আর তাই গত ৫০০ বৎসর ধরে দ্যা ভিঞ্চির এই চিত্র টি নিয়ে এতো জানার আগ্রহ ।
১৪৫২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই এপ্রিল লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি ইতালির ভিঞ্চি শহরে জন্ম গ্রহন করেন ।
এই বহুমুখী প্রতিভাধর ব্যাক্তি টির অনবদ্য এক কীর্তি চিত্রকর্ম ‘ মোনা লিসা ‘। যদিও আমরা বলে থাকি মোনালিসা । তার পরেও সত্যিটি হল এটির নাম ‘ মোনা লিসা ‘ ।
‘মোনা লিসা’ কথাটির অর্থ হল ‘ মাই লেডি ‘।

কেউ কেউ দাবী করেন দ্যা ভিঞ্চি তাঁর ২য় পুত্রের জন্মের পরে এই ছবিটি আঁকেন । কেউ কেউ দাবী করেন বন্ধুপত্নী লিসা গেরাদিনির প্রতিচ্ছবি এই চিত্র টি( ইতালির ফ্লোরেন্স)। কেউ দাবী করেন ‘মাদার মেরীর ‘ প্রতিচ্ছবি এটি । আবার কেউ কেউ দাবি করেন যে , দ্যা ভিঞ্চি’র নিজের ছবি এটি । দ্যা ভিঞ্চি নিজেকে একজন মহিলা কল্পনা করেই এই ছবিটি এঁকেছিলেন !



চিত্র কর্মটি কিন্তু বেশী বড় নয় । এটির আয়তন ৩০ ইঞ্চি বাই ২১ ইঞ্চি চওড়া ।
এটি কিন্তু কাগজ বা প্যাপিরাসের উপর আঁকা চিত্র নয় , এটি মুলত কাঠের তক্তার( বা এ ধরনের কিছু)উপর আঁকা ছবি ।
ইতালির ফ্লোরেন্সে যে সময় ছিলেন দ্যা ভিঞ্চি সে সময় এই ছবিটি আঁকেন । সেটি ১৫০৩ সালের কথা । ১৫০৩ তে দ্যা ভিঞ্চি এটি আঁকা শুরু করেছিলেন । ১৫০৬ সালে এই ছবিটি পূর্ণ অবয়ব লাভ করে । আর দ্যা ভিঞ্চি এটি শেষ করেন ১৫১৭ সালে ।
‘মোনা লিসার ‘ চোখের পাতায় পাপড়ি আর ভুরু আঁকতেই তাঁর চলে যায় চার চারটি বৎসর । অথচ ভাল করে দেখুন ‘ মোনা লিসার’ চোখে কোন পাপড়ি নেই । ভুরূতে কোন লোম নেই ।
যারা ছবিটি নিয়ে পর্যালোচনা করেন তাঁরা বলেন – আসলে ‘মোনা লিসা’র চোখের পাপড়ি ছিল আবার ভুরুও ছিল । কিন্তু সময়ের পটভুমিতে এ সব হারিয়ে গেছে ।
দ্যা ভিঞ্চি ইতালিতে জন্ম নেন কিন্তু ছবিটি ফ্রান্সে এলো কি করে তা কেউ বলতে পারেন না।
তবে এক সময় আর সে সময় ফ্রান্সের রাজ রাজড়া দের প্রিয় ছিল এই চিত্র টি । পরে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের অত্যন্ত প্রিয় ছবি হিসাবেই বোনাপার্টের বেডরুমে দীর্ঘকাল ছিল এই ছবিটি ।

ছবিটি কিন্তু এ শতকের প্রথম দিকে এতো আলোচিত ছিল না । ছিল না এর কোনই দর্শক ।
ছবিটি ফ্রান্সের প্যারিস এর ল্যুভরে( LOUVRE ) মিউজিয়ামে ছিল ।
কিন্তু ১৯১১ সালে ছবিটি চুরি হয়ে যায় । ল্যুভরে ( LOUVRE. ) মিউজিয়াম এর কর্তারা প্রথমে ভাবেন ছবিটি চুরি করেছেন আর এক মহান চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো । পরে সেই সন্দেহ মিথ্যায় পর্যবসিত হয় । সে সময় সাতদিনের জন্য ফ্রান্সের প্যারিসের ল্যুভরে ( LOUVRE ) মিউজিয়াম বন্ধ করে দেওয়া হয় । শুরু হয় অনুসন্ধান । পরে ভিনাসানজো পেরুভিয়া নামে একজন মিউজিয়াম কর্মীর কোটের ভেতরে পাওয়া যায় ছবিটি । একান্তই ছোট বলে তিনি তার কোটের ভেতরে করে ট্রেনে চেপে ইতালির ফ্লোরেন্সে নিয়ে যান ছবিটি । সেখানে ছবিটি বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পরেন তিনি ।
ভিনাসানজো পেরুভিয়া ছিলেন একজন ইটালিয়ান । তিনি মনে করতেন এই চিত্র কর্মটি ইতালির সম্পদ । তাই এটি ইতালিতে থাকা উচিত । কোনমতেই এটি ফ্রান্সে থাকা উচিত নয় এমন ভাবনায় বদ্ধ পরিকর ছিলেন তিনি । কিন্তু ধরা পরে যান পেরুভিয়া ।

পরে ছবিটি ফ্রান্সে আনা হয় । ল্যুভরে( LOUVRE ) মিউজিয়ামে চরম সতর্কতার আর নিরাপত্তার সাথে রাখা হয় ছবিটি । ততদিনে ছবিটি নিয়ে মার মার কাট কাট রব উঠে যায় । শত শত হাজার হাজার মানুষ ছবিটি দেখতে ভীড় জমাতে শুরু করে । এখনো ছবিটি প্যারিসের ল্যুভরে ( LOUVRE ) মিউজিয়ামে সাবধানে সংরক্ষিত আছে । প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই ছবিটি পরিদর্শনে যায় কিন্তু কাছে যেতে পারে না । নিরাপত্তা বেষ্টনী আছে এখানে ।
কিন্তু সেই ইটালিয়ান ভিনাসেনজো পেরুভিয়ার কি হল?



# ভিনাসেনজো পেরুভিয়া। #

ছবিটি চুরির দায়ে ‘ভিনাসেনজো পেরুভিয়া’কে এক বৎসরের ( মতান্তরে ছয় মাস ) জেল সাজা দেয় ফ্রান্সের আদালত ।
কিন্তু ইতালি সরকার ভিনাসেনজো পেরুভিয়াকে ‘তাঁর সেই জাতীয়তাবাদী চেতনার কারনেই ‘ জাতীয় বীর ‘ উপাধিতে ভূষিত করে ।

অনেক বিষয়ই নখদর্পণে ছিল কালের অভূতপূর্ব গুণাবলীর অধিকারী এই শিল্পী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির ।
তিনি এক জায়গায় লিখেছেন ” শিল্প হল এমন এক মাধ্যম যার দ্বারা সাধারন মানুষ হাই ভেন্টেলেসনের কোন কিছুর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে ‘।
কিসের কথা বলেছিলেন দ্যা ভিঞ্চি ? মায়ান সভ্যতা,মিসরীয় সভ্যতা বা তাজমহলের সম্পর্কে জ্ঞাত এই মহান চিত্রকর,গুণী আর বিজ্ঞ লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি কি বলেছেন তাঁর এই বাক্যে??
আসুন তাঁর ‘মোনা লিসা’র সম্পর্কে আর একটু জানি !

মোনালিসার দুটো ছবি এক বড় আয়নায় পাশাপাশি ৯০ ডিগ্রী এঙ্গেলে ধরুন অথবা বা দিক থেকে আয়নায় দেখুন, আপনার চোখে ভেসে আসবে নিচের দৃশ্যটি । হা,মনোযোগ দিয়ে দেখুন ওখানে একজন ভিনগ্রহের মানুষ লুকিয়ে আছে ! ‘৫০০ বৎসর পূর্বে’ আবার ‘ভিনগ্রহের মানুষ’ — মিলছে না যে !!!দেখুন নিচে —-


দ্যা ভিঞ্চি মারা যান ফ্রান্সে ১৫১৯ সালের ২ মে ।
সব শেষের কথা – অনেকেই বলেন মোনালিসার ছবিটি ঘরে থাকলে নাকি সে ঘরে দুঃখ আসে ! কুসংস্কার হতে পারে আবার বাস্তবতাও হতে পারে ।
কি ? নেবেন নাকি একটু রিস্ক ? এরপরেও রাখবেন নাকি মোনলিসার পোস্টার ?
ভাবুন– এবার —
( আগামী শুক্রবার অর্থাৎ বিশ মে দেখুন ” Monalisa: মোনালিসা-লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির মোনালিসা । পার্ট টু ” ।)

একটি ‘এমকে ( MK ) ‘সংগ্রহ এবং লিখনি ~~



ফিচার গ্রুপ ।
হ্যালো জনতা ডট কম ।
hellojanata.com .

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।