প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ৪৪ – কাঁসা-পিতলে আভিজাত্য!! # আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

  ## A hellojanata.com Presentation  

প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ৪৪ – 

কাঁসা-পিতলে আভিজাত্য!! 

# আকরাম উদ্দিন আহমেদ।



প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ৪৪ –
কাঁসা-পিতলে আভিজাত্য!!
# আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

কাঁসা-পিতলে আভিজাত্য!!

বাঙালির গৃহস্থালী ও সংস্কৃতির সাথে আষ্টে পৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে কাঁসা-পিতলের বাসনপত্র। চাহিদা ও কাঁচা মালের অভাবে এই শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। শহরে তো বটেই, গ্রামগঞ্জেও আজকাল আর খাবার টেবিলে কাঁসা-পিতলের থালা-গ্লাসের উপস্থিতি সচরাচর চোখে পড়ে না। অথচ একসময় এর ব‍্যবহারে প্রকাশ পেত আভিজাত্য।

চুলার ছাইয়ের সঙ্গে একটু তেঁতুল দিয়ে ঘষামাজা করা ঝকঝকে কাঁসা-পিতলের থালা-বাটি, চামচ, জগ, কলসি, বালতি, বদনা, পানের বাটা, সুরমাদানি গত শতকের মাঝামাঝিতেও প্রচুর দেখা যেত। বিয়েশাদি, খাৎনা, অন্ন প্রাসন, জন্মদিন কিংবা আকিকা সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানাদির নিমন্ত্রণে চমৎকার কারুকাজ করা কাঁসা–পিতলের জগ, কলসি, থালা-বাটির সেট উপহার দেওয়ার প্রচলন ছিল। গৃহস্তের আভিজাত্যের পরিচয় প্রকাশ পেত কাঁসা–পিতলের সামগ্রীর মান ও পরিমাণের প্রাচুর্যের ওপর। এসব তৈজসপত্র কেবল যে বহুদিন টিকে থাকত, তাই নয়, পরিবারের মূল্যবান সম্পদ হিসেবেও গণ্য হতো। সোনা-রুপার অলংকারের পরে কাঁসা-পিতলের তৈজসপত্রই ছিল বাড়ির দামি সামগ্রী। সে কারণে আগে চোর-ডাকাতেরও নজর থাকত এসব থালাবাসনের প্রতি। নগদ অর্থ আর অলংকারের সঙ্গে সঙ্গে তস্করেরা বস্তা ভরে কাঁসা-পিতলের সামগ্রীও লুটে নিয়ে যেত।

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কাঁসা-পিতলের সামগ্রীও বদলে যেতে থাকে। তার জায়গায় চলে আসে চিনামাটির থালা-বাটি। পরে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অভঙ্গুর ও তাপসহনীয় কাঁচ, পর্সিলিন, পাইরেক্স, মেলামিনসহ নানা রকম উপাদানের তৈরি তৈজসপত্র। আর এখন তো স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় প্লাস্টিকের সামগ্রীর জয়জয়কার। তা সত্ত্বেও কাঁসা-পিতলের তৈজসপত্র একেবারে উঠে যায়নি। কিছু কিছু বাড়িতে এখনো এসব থালাবাসন ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেকে শখ করে এসব নতুন করে কিনেও আনছেন।



তবে কাঁসার তৈরি জিনিস পত্রের দাম বর্তমানে এতো বেশি যে, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। দামে সস্তা হওয়ায় বিকল্প হিসেবে স্টিল, মেলামাইন, চিনামাটি, কাঁচ ও প্লাস্টিকের সামগ্রী কাঁসা শিল্পের বাজার দখল করে নিয়েছে। যদিও এই সব আসবাব পত্রের স্থায়ীত্ব কম এবং অনিরাপদ। একটা সময়ে এগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং জীবাণু বহন করে। অপর দিকে কাঁসা-পিতলের বাসনপত্র দীর্ঘ স্থায়ী এবং এতে কোনো জীবাণু থাকতে পারে না। ফলে এগুলো নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত।

কাঁসা, পিতলের তৈজসপত্র যে কেবল টেকসই, তাই নয়, এর খানদানী ব্যাপারটাই আলাদা। দাম হয়তো একটু বেশি, তবে দাম দিয়ে তো আর ঐতিহ্যের বিচার চলে না। তাই বাড়ির খাবার টেবিলে হরেক রকম স্বাদের খাদ্যসম্ভারের পাশাপাশি পাত্রের বৈচিত্র্য আনতে চাইলে যোগ করতে পারেন কাঁসা–পিতলের তৈজসপত্র।

আকরাম উদ্দিন আহমেদ
কুড়িগ্রাম।
১৪/০৫/২০২২

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।


লেখক ।

কুড়িগ্রাম । 

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
hellojanata.com —
https://hellojanata350.blogspot.com–

হ্যালো জনতা ডট কম ।
hellojanata.com .



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।