প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ৪৬ – স্মৃতির আড়ালে কয়লার ইস্ত্রি!! # আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

  ## A hellojanata.com Presentation  --


প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়’ ৪৬ – স্মৃতির আড়ালে কয়লার ইস্ত্রি!! # আকরাম উদ্দিন আহমেদ।



স্মৃতির আড়ালে কয়লার ইস্ত্রি !
পরিপাটি পোশাক মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে তোলে, তেমনি প্রকাশ করে তার ব্যক্তিত্ব। অন্যের সামনে আত্মবিশ্বাসীও করে তোলে কয়েকগুণ। তাইতো অফিস কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে নিজের পরিধানের পোশাকটি আয়রনের মাধ্যমে মসৃণ করে নেন বেশিরভাগ মানুষ।

আগে জামাকাপড় আয়রন করতে লন্ড্রি দোকানে যেতে হলেও এখন বেশিরভাগ মানুষ ঘরেই সেটি করে ফেলেন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রায় প্রতিটি ঘরেই রয়েছে বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি। অথচ এক সময় বাসায় বা লন্ড্রিতে কাপড় আয়রন বা ইস্তিরি করে পরিধান সহজসাধ‍্য ছিলনা। একদিকে লন্ড্রির অভাব অপর দিকে মানুষের সামর্থ্যের অভাব আর তখনও বৈদ্যুতিক ইস্তিরি আবিষ্কার হয়নি। আবার অনেক স্থানে বিদ্যুৎই ছিল না। যার ফলে কয়লার ইস্ত্রি দিয়ে করা হতো জামাকাপড় আয়রন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও আমরা প্রাইমারি এবং হাইস্কুলে পড়ার সময় কাপড় আয়রন ছাড়াই পড়েছি। গ্রামবাংলার লোকেরা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে হলে কাঁসা বা পিতলের বাটি গরম করে সেটি দিয়ে কাপড় মসৃণ করে পড়তেন। তখন মধ্যবিত্ত পরিবারে চল ছিল কাঠকয়লা ব্যবহৃত ইস্ত্রির, পাখা দিয়ে ক্রমাগত বাতাস করে জ্বালানো হতো কয়লা, তারপর চলত কাপড় মসৃণ করার কাজ। তবে আমার আবিস্কৃত কয়লা জ্বালানোর অভিনব এক পদ্ধতির কথা আমার মনে পরে। স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় আমরা ছিলাম ভারতে আমাদের ফুফুর বাড়িতে। বাড়িটি ছিল নদীর তীরে। বাড়িতে সবসময়ই নদীর বাতাস বইতো। ফুফুদের একটি কয়লার ইস্ত্রি ছিল। কাপড় আয়রন করার পূর্বে কয়লা ভরে আমি বুদ্ধি খাটিয়ে কয়লার ইস্ত্রিটি পাখা দিয়ে বাতাস না করে ঘরের দরজাটা একটু ফাক করে ওখানে রেখে দিতাম। আর দরজার ফাক দিয়ে তীব্র বাতাস এসে মুহুর্তে কয়লা জ্বলে লাল হয়ে উঠতো। আমার আর হাত পাখা দিয়ে বাতাস করে কয়লা জ্বালাতে হতোনা। একটা অতিরিক্ত কাজের হাত থেকে আমি রেহাই পেতাম।


এই ইস্ত্রি এল কী করে? কাঠকয়লা ব্যবহার করে কাপড় আয়রনের প্রথম প্রচলন শুরু হয়েছিল চীনে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে সেখানে ধাতব পাত্রে জ্বলন্ত কয়লা দিয়ে কাপড় আয়রন করা হতো। তবে সেটার আকৃতি আজকের দিনের ইস্ত্রির মতো ছিল না। ১৭ শতাব্দীতে ভারী লোহা ব্যবহার করে ‘ব’ আকৃতির সমতল ইস্ত্রি তৈরি শুরু হয়। এই সমতল লোহার ইস্ত্রি কেরোসিনের চুলায় অথবা ষ্টোভে গরম করে কাপড় মসৃণ করা হতো। লন্ড্রি গুলো এই সমতল ইস্ত্রির সঙ্গে কেরোসিনের পাম্প করা ষ্টোভ ব‍্যবহার করত।

তারপর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৮৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি ডব্লিউ সিলে তৈরি করেন প্রথম বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি। কিন্তু সিলে উদ্ভাবিত ইস্ত্রির ওজন ছিল প্রায় ১৫ পাউন্ড, তা গরম হতে দীর্ঘ সময় নিত। তারপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতাায় নানা উন্নয়ন ঘটে নানান ধরনের তৈরি করা বৈদ‍‍্যুতিক ইস্ত্রির।

আর অপর দিকে প্রযুক্তির এই ডিজিটাল যুগে কাঠকয়লার ইস্ত্রি চলে যায় স্মৃতির আড়ালে।

আকরাম উদ্দিন আহমেদ
লেখক
কুড়িগ্রাম।
২৮/০৫/২০২২

আকরাম উদ্দিন আহমেদ।



# ছবি -লেখক সংগ্রহে প্রেরিত ।
# জনাব আকরাম উদ্দিন আহমেদ হ্যালো জনতার নিয়মিত লেখক ।
# তাঁর সকল লেখা আমাদের ব্লগ এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয় ।
# লেখাটি আমাদের ব্লগেও পাবেন ।

হ্যালো জনতা ডট কম ।
hellojanata.com .

হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।
কপি অ্যান্ড পেস্ট টু ইওর ব্রাউসার ।
https://hellojanata350.blogspot.com–

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।