Padma Bridge: পদ্মা সেতু- মোঃ মনসুরুল আজম ।

  ## A hellojanata.com Presentation  -




# তাহাঁদের উচ্ছাস । #
# ফিচার গ্রুপ পোস্ট –#
আজকের লেখা লিখেছেন
মোঃ মনসুরুল আজম ।

পদ্মা সেতু!!

বাংলাদেশের এযাবৎকালে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হল পদ্মা সেতু। এটি শুধু একটি সেতুই নয় এটি ছিল সারা বিশ্বের কাছে বাঙালি জাতির একটি চ্যালেঞ্জ। অবশেষে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে স্বপ্নের অবকাঠামো আমাদের পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু আমাদের আবেগ, অহংকার এবং আমাদের গৌরবের একটি অধ্যায়।

পদ্মা সেতু আমাদের এমন একটি মাইলফলক যা কিনা আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। সারা বাংলাদেশের মানুষ দুচোখ ভরে এখন দেখছে আমাদের আত্মশক্তির প্রতীক এই পদ্মা সেতু কে। সারা বিশ্বজুড়ে যদি করো না সংকট দেখা না দিত তাহলে আরও আগেই আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারতাম। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি নানান রাজনৈতিক, কারিগরি ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

একটি স্বাধীন দেশের জনগণের সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় মেগা প্রকল্প সম্পন্ন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিরল একটি পাওয়া। সকল বাধা-বিপত্তি এবং প্রতিকূলতাকে জয় করে সফল হওয়ার এই সংস্কৃতি আমাদের শিখিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর তিনি শূন্য হাতেই মানুষের অজেয় প্রাণশক্তিকে পুঁজি করেই সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নেমে পড়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু গড়ার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রিয় নেত্রী দুর্বার গতিতে স্বদেশ গড়ার এক অসামান্য লড়াইয়ে নেমেছেন। তাই আমাদের অকপটে স্বীকার করতেই হবে পদ্মা সেতু সাহসী নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালে প্রথম মাওয়া ফেরিঘাটে পদ্মা সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। পরে নানা রকম রাজনৈতিক হীনমন্যতার কারণে এর কার্যক্রম থেমে যায়। এরপর আবার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে পুনরায় তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প কে জাতীয়ভাবে গুরুত্ব বিবেচনা করে অগ্রাধিকার তালিকায় নিয়ে আসেন। এরপর আইডিবি, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, জাইকা এই সেতুর অর্থায়নের অংশীদার হলেও পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংক যুক্ত হয়। কিছুদিন পর বিশ্বব্যাংক অযথা বিতর্কিত নোংরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই প্রকল্প স্থগিত করে দেন। সেই সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সব অভিযোগের তোয়াক্কা না করে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন যে আমরা নিজেরাই পদ্মা সেতুর তৈরি করব।
এক কথায় বলতে হয় এত বড় প্রকল্পের অর্থায়ন বাংলাদেশ নিজেদের সম্পদ থেকেই করতে পেরেছে।

এবার এই সেতু নির্মাণের কিছু কারিগরি চ্যালেঞ্জের কথা বলে রাখি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় খরস্রোতা নদী আমাজনের পরেই রয়েছে আমাদের পদ্মার নাম। মাওয়া পয়েন্টে স্রোতের বেগ সবচেয়ে বেশি থাকে, এখানে পিলার বসানো চাট্টিখানি কথা নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম পিলার (১২৮ মি) স্থাপন করা হয়েছে পদ্মা সেতুতে। বিদেশ থেকে দৈত্যাকার বিশাল যন্ত্রপাতি আনতে হয়েছে। কারিগরি নকশার পরিবর্তন করতে হয়েছে। দেশের এবং বিদেশের সকল পরামর্শকদের সমন্বয় করতে হয়েছে। অনেক বিদেশী বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিক এই সেতুতে কাজ করেছে। মাঝখানে বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনার কারণে এর কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত ছিল।

 

 পদ্মা সেতু- মোঃ মনসুরুল আজম ।




এতসব নানা রকম জটিলতা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। স্বপ্নের এই পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই অঞ্চলের ২১ টি জেলায় অর্থনীতিতে চরম পরিবর্তন ঘটবে।
এসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষ, কৃষক, জেলে, তাঁতি সহ ছোটখাটো ব্যবসায়ীগণ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে অনায়াসে যুক্ত হতে পারবেন। এখানে এখন তৈরি হবে নতুন নতুন শিল্প কারখানা , আবাসন প্রকল্প, রিসোর্ট,বহুতল ভবন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদগণ মনে করছেন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের জিডিপি ২.৫ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যাবে। এমনি ভাবেই আমাদের বাংলাদেশ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।।

আগামী২৫ শে জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির মহাসড়কে ইতিহাসের পাতায় আরেকটি মাইলফলক রচিত হতে যাচ্ছে। দেশনেত্রী শেখ হাসিনা পুরো জাতির মননের একটি ধারনা কে দিয়েছেন ” আমরাও পারি ” । হতাশা না ছড়িয়ে আশার আলো জাগিয়ে একদিন আমরাও নিয়ে যাবো বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে উন্নতির চরম শিখরে !!!


মুহাম্মদ মনসুরুল আজম।।
ব্যুরো চীফ। চট্টগ্রাম।।

হ্যালো জনতা ডট কম ।
hellojanata.com .
# লেখাটি আমাদের ব্লগে প্রকাশিত এবং সংরক্ষিত ।
# এ ছাড়াও সব লেখার মতই ফেসবুক,টুইটার ও লিঙ্কেডিনে প্রচারিত ।
হ্যালো জনতার ব্লগ সাবস্ক্রাইব করুন।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি-রবি ডাকুয়ার বিজয় দিবসের কবিতা ‘বিজয়ের জন্যে’।।

তাল বা খেজুর রসের বিকল্প, গোলফল দিয়ে হতে পারে রস গুড়-রবি ডাকুয়া ।।

কেন আমাদের এমন মাথা নিচু ছবি দেখতে হবে ? মুসা কামাল-সম্পাদক- হ্যালো জনতা .কম ।।